WAZIPOINT Engineering Science & Technology: Bangla-Post
Showing posts with label Bangla-Post. Show all posts
Showing posts with label Bangla-Post. Show all posts

Thursday, December 26, 2019

চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য্য গ্রহণের কল্প কথা

 

দেশ-বিদেশর কল্প-কথায় চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য্য গ্রহণ

Eclips

বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে আর কোন কল্প কথার স্থান নাই। প্রমান ছাড়া এখন আর কোন কিছুই যেন বিশ্বাস করা বা করানো সম্ভব না। কখনও এমনও ঘটছে যে বাবা-মা ও সন্তানের সম্পর্ক প্রমানের জন্যও বৈজ্ঞানীক প্রমানের প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। মানুষ চাদের পিঠে গিয়ে দেখে আসছে, সূর্য্য সম্পর্কে জানছে অনেক অজানা তথ্য।

কিন্ত তার পরেও মাঝে মধ্যে জানতে ঈচ্ছা করে কল্প কথা, কল্প কাহিনী। আর তাই আজকের আয়োজন চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য্য গ্রহণের দেশ বিদেশের কল্প কথা। তবে এ লেখা কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য নয়; নয় কারও বিশ্বাসে আঘাত করার জন্য। শুধুই জানার জন্য। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ কাউকে আক্রমন করে মন্তব্য করবেন না।
01. চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্য্য গ্রহণ আসলে সূর্য্য ও চাদের মধ্যে যুগ যুগ ধরে চলে আসা বিরোধের জন্য ঝগড়ার ফল। গ্রহণের সময় মানুষেরা যখন ঘর থেকে বের হয়ে আসে দেখার জন্য, তখন চাদ ও সুর্য্য মনে করে পৃথিবীর মানুষরা তাদের ঝগড়া থামাতে আনুরোধ করছেন, তাই তো ঝগড়া থেমে যায়। আফ্রিকা মহাদেশের টগো ও বেনিন দেশের মানুষের মধ্যে এমন কল্প কথাই প্রচলিত। 
02. চন্দ্র গ্রহণ আসলে কিছুই না, একটা চিতা-বাঘ চাদকে আক্রমন করে খেয়ে ফেলার জন্য। প্রমান হলো পূর্ন গ্রহণের সময় চাদের চার দিকে লাল রক্তের আবা দেখা যায়, তাছাড়া গ্রহণের সময় চাদ ভয়ে কাপতে থাকে। মানুষের ধারনা, চাদকে খাওয়ার পরে পৃথিবীকে আক্রমণ করবে এবং সমস্ত মানুষ খেয়ে ফেলবে। আর এ থেকে বাচার জন্য হাউ-কাউ করে অনেক শব্দ করে থাকে এবং তাদের পোষা কুকুর পিটিয়ে কুকুরের শব্দ করে থাকে যাতে চিতা কুকুরের শব্দ শুনতে পায়। কারণ চিতা কুকুরকে বেশ ভয় পায়। 
03. কোন কোন এলাকার মানুষদের কল্প বিশ্বাস, চাদের ২০ জন বউ আছে। আরও আছে অনেক পোষা প্রাণী যার মধ্যে হিস্র পাহড়ী সিংহ ও সাপও রয়েছে। বেচারা চাদ একা যখন এতগুলো প্রাণী ও বউদের জন্য খাবার আনতে ব্যর্থ হয়, তখন পোষা প্রণীগুলো চাদকে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করে ফেলে। অবশেষে বউরা এসে চাদকে রক্ষা করে ও রক্ত দিয়ে সুস্থ করে তুলে। 
04. আমেরিকার কোন কোন উপজাতিদের কল্প বিশ্বাস, চাদ মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর অসুস্থ চাদকে সুস্থ করার দ্বায়িত্ব এসব উপজাতি লোকদের। তাইতো চন্দ্র গ্রহণের সময় তারা গান গেয়ে ও প্রার্থণা করে চাদকে সুস্থ করে তুলে। 
06. কিছু কিছু হিন্দুদের বিশ্বাস, গ্রহণের সময় গোসল করতে পারলে রোগ-ব্যাধি, আপদ-বিপদ দুর হয়ে যায়। তাইতো গ্রহণের সময় গঙ্গায় গোসলের ভীর পরে যায়। আবার চায়নার কোন কোন সম্প্রদায় এটাকে ব্যবসা ও সংসারের মঙ্গলের প্রতীক হিসাবে মনে করেন।

07. আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়াতে লোকদের বিশ্বাস পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতির পাপের কারণে ঈশ্বর রাগান্নিত হওয়ার বহি:প্রকাশ হলো চন্দ্র ও সূর্য্য গ্রহণ। (এই বিশ্বাসের কারণে ২০০১ সালে কিছু বিজ্ঞান মনা লোক কল্পবিশ্বাসীদের উপর আক্রমণ করেন, ফলে ২০০৬ সালের গ্রহণের পুর্বেই সরকার গ্রহণের বৈজ্ঞানীক কারণ ব্যাখ্যা করে জনসংযোগ করেন)।
08. ভারতের কোন কোন সম্প্রদায় মনে করেন চন্দ্র ও সূর্য্য গ্রহণের সময় সামনের সমস্ত খাবার ছুড়ে ফেলতে হবে, কারণ তা আর নিরাপদ থাকে না। 
09. প্রাচীন কল্প বিশ্বাস হলো, চন্দ্র-সূর্য্য যে কোন গ্রহণ আসলে দুইটা বৃহত নওজোয়ানের মধ্যে পরমাত্না পাওয়ার লড়াই। আর এ সময়ই গ্রহণ হয়ে থাকে। যে এ লড়াইতে আন্যকে মেরে জিতে যাবে সেই পরমাত্না লাভ করবে। 
10. মধ্য যুগ পর্যন্ত ইউরোপিয়ানদের বিশ্বাস ছিল চন্দ্র বা সূর্য্য গ্রহণের সময় মিলনে যে শিশু জন্ম গ্রহণ করে তা কুৎসিত ও যাদুকরী শক্তিসম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই তারা এ সময়কে এরিয়ে চলতো। 
11. বর্তমান যুগের কল্প-কথায় অনেকে বিশ্বাস করেন যে, চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্য্য গ্রহণের সময় কোন গর্ভবতী মহিলা যদি তার পেট স্পর্শ করেন তাহলে গর্ভের সন্তান জন্মদাগ নিয়ে জন্মাবে। আর এ দাগের আকার নির্ভর করে কত জুড়ে স্পর্শ করা হয়ে ছিল তার উপর। 
12. এসকুমো’রা কল্প বিশ্বাসের ভরে, চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্য্য গ্রহণের সময় তাদের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উল্টিয়ে রাখেন। তাদের ধারণা মহিলারা চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্য গ্রহণের সময় তাদের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উল্টিয়ে রাখতে ভুলে যাওয়ার কারনেই তাদের রোগ-ব্যাধি হয়ে থাকে। তাইতো গ্রহণের সময় মহিলারা তাদের চামুচ, কাটা-চামুচ, ছুরি উল্টিয়ে রাখেন। কারণ তাদের বিশ্বাস অসুস্থ চন্দ্র-সূর্য্য রশ্মির মাধ্যমে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে থাকে। 
13. অনেকের বিশ্বাস ভিজা চুলে ঘুমালে চন্দ্র গ্রহণের প্রভাব হয়। 
14. চাইনিজ কল্প কথা অনুসারে, কোন এক প্রেতাত্না বিশিষ্ট ড্রাগন সূর্য্য বা চন্দ্রকে গিলে ফেলে যা পৃথিবীর মানুষ গ্রহণ হিসেবে দেখেন। তাইতো আদিম চাইনিজ’রা চন্দ্র বা সূর্য্য গ্রহণের সময় ড্রাগনকে তাড়ানোর জন্য পৃথিবী থেকে বাদ্য-যন্ত্র, হড়ি-পাতিল, লোটা-বদনা বাঝিয়ে প্রচন্ড শব্দ করে থাকত। আধুনিক চাইনিজ’রা উনবিনশ শতাব্দীর প্রথম দিকে সমুদ্র থেকে নৌ সেনারা কামানের গোলা ছুড়ে মারত ড্রাগন তারাতে। 
15. ভারতের কোন কোন সম্প্রদায় চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য্য গ্রহণের আগে ও পরে গোসল করে নিজেকে পবিত্র করে নেয়। এতে সমনস্ত প্রেতাত্নার আছর থেকে নিজেকে মুক্ত করা হয়। আর । ভবিষ্যতে যাতে এমন অসুভ দৃশ্য না দেখতে হয় তার জন্য পেসাব দিয়ে চোখ ধোয়ে পবিত্র করা হয়। 
16. তিব্বতীয়’দের কল্প কথায় আছে, চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্য্য গ্রহণের সময় ভাল বা মন্দ যেকোন কাজই করা হোক না কেন, তার ফলাফল হাজার গুণ বর্ধিত হয়ে যায়। 
17. রেড ইন্ডিয়ানদের ওঝিবাউয়াস সম্প্রদায় বিশ্বাস করেন যে, চন্দ্র-সূর্য্য জ্বলতে জ্বলতে এর আগুন নিভে যায়। ফলে চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য্য গ্রহণ হয়ে থাকে। তাই পুন:রায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তারা তীরের মাথায় আগুন ধরিয়ে চন্দ্র বা সূর্য্যের দিকে ছুড়ে মারে। ফলে চন্দ্র বা সূর্য্য আবার তার আসল উজ্জলতা শক্তি ফিরে পায়। 
18. নীলগিরি’র কোন সম্প্রদায় বিশ্বাস করেন যে, চাদের পিঠে একটা খরখোশ আছে। যখন চন্দ্র দস্যু খরখোশকে গিলে ফেলে তখন চন্দ্র গ্রহণ হয়। দস্যুর হাত থেকে খরখোশকে রক্ষার জন্য তারা পৃথিবীতে চেচামেচি ও শব্দ করে থাকে, এমন কী চন্দ্র গ্রহণকালীন সময় তারা কোন কিছু না খেয়ে রোজা পালন করে থাকে। 
19. মান্ডা সম্প্রদায়ের কল্প বিশ্বাস, চন্দ্র ও সূর্য্য ধানকো দেবতার কাছ থেকে টাকা ধার করে, কিন্ত যথাসময়ে দেনা শোধ করতে না পারায় ধানকো তাদের জেলখানায় আটকিয়ে রাখে। তাইতো চন্দ্র ও সূর্য্য গ্রহণের সময় তাদের দেখা যায় না। তাই তারা তাদের যন্ত্রপাতি, ধান, যোদ্ধাস্ত্র একত্র করে বিচারালয়ের সামনে হাজির করেন যাতে চন্দ্র-সূর্য্য তা গ্রহণ করে ও তা দিয়ে দেনা শোধ করেন। 
20. মিশরের ফেরাউন বাদশা মনে করতেন সূর্য্য সবসময় চলন্ত, তাই সুর্য্য দেবতার গ্রহণের সময় বাদশা প্রধান টেম্পলের সামনে সূর্য্যের প্রতিনিধী হিসেবে হাটা-হাটি করতে থাকতেন। 
21. জাপানি কল্প কথা অনুসারে, সূর্য্য গ্রহণের সময় সূর্য্যের আলো কমে যায়। আর তারা সে ঘাটতি পূরণের জন্য একধরনের চকচকে পাথড়ের তৈরী গলার মালা ক্লাউরিয়া গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখতেন যাতে আলো ছড়িয়ে সূর্য্যের ঘাটতি আলো পূরণ করতে পারে। 
22. কোরিয়ান কল্প কথা হলো কালপনিক কুকুর সূর্য্যকে চুরি করে নিয়ে যায়। ফলে সূর্য্য গ্রহণ হয়।

চন্দ্র গ্রহণ ও সুর্য্য গ্রহণের সার কথা:

ইসলাম ধর্মের হাদিস গ্রন্থ অনুসারে ইসলামের নবী মুহাম্মদ ( সাঃ) এর শিশু সন্তান যে দিন মারা যান সেদিন সূর্য্য গ্রহণ হয়েছিল। লোকজন বলাবলি করতে লাগলেন আল্লাহ্ তার সম্মানে এমন ঘটনা ঘটিয়েছন। তখন তিনি ব্যাখ্যা করে বল্লেন চন্দ্র গ্রহণ বা সূর্য্য গ্রহণ কাহারো জন্ম-মৃত্যুর সাথে সম্পর্কিত নয়। বরং এটা আল্লহর নিদর্শনাবলির মধ্যে একটি। তিনি তাহার অনুসারিদের নিয়ে সূর্য্য গ্রহণ চলাকালিন সময় মসজিদে নামাজ আদায় করলেন।
আরও জানতে পড়ুন-
Technorati Tags: ,,

Friday, April 19, 2019

জি.এম. ফুড কি এবং কতটা স্বাস্থ্য-সম্বত?

জি.এম. ফুড কিঃ


জেনেটিক্যাল মডিফাইড (জি.এম.) ফুড এমন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত খাদ্য শস্য যেখানে বায়োটেকনোলজিক্যাল প্রক্রিয়ায় DNA পুনঃস্থাপন বা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে উদ্ভিদ কোষের জিনের পরিবর্ধন সাধন করা হয়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ভিন্ন জাতের কোষ থেকে জিন সংগ্রহ করা হয় বা বিদ্যমান কোষকে পুনঃবিন্ন্যাস করা হয় এবং পরিবর্তিত নতুন কোষের বৈশিষ্ট মূল কোষের বৈশিষ্ট থেকে সর্ম্পূন ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ- জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে প্রাপ্ত দেরিতে পাঁকানো টমেটো; পোকা-মাকড় দমন ক্ষমতা সম্পন্ন খাদ্য শস্য যেমন: ভাইরাস প্রতিরোধক স্কোয়াস, কলোরডো আলু এবং পোকা নিরোধ আলু; আগাছা প্রতিরোধক শস্য যেমন: বিশেষ ধরনের তুলা ও সয়াবিনসহ বিভিন্ন ধরনের শস্য। সেই ১৯৮৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বীজ উৎপাদনকারীরা ১১,৬০০ এরও বেশী বীজ  মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ USDA APHIS (United States Department of Agriculture Animal and Plant Health Inspection Service) এ আবেদন করেছেন, যার শতকরা ৯২ ভগেরও বেশী আবেদন অনুমোদন করা হয় এর মধ্যে অধিকাংশই প্রধান প্রধান খাদ্য শস্যের। উল্লেখযোগ্য ভুট্টা, সয়াবিন, আলু, ও তুলা ইত্যাদি। এছাড়াও ৬,৬০০ এরও বেশী আবেদন আগাছা ও পোকা-মাকড় প্রতিরোধক বিষয়ক জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং সংশ্লিষ্ট। খাদ্য মজুদ ও পুষ্টিমান বাড়ানোর জন্য জি.এম. ফুড ভবিশ্যতে খাদ্য উৎপাদনকারীদের একমাত্র সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
Animation of the structure of a section of DNA...
Animation of the structure of a section of DNA. The bases lie horizontally between the two spiraling strands. (Photo credit: Wikipedia)


সর্ব প্রথম জি.এম. ফুড হিসেবে Flavr SavrTM নামে এক ধরনের টমেটো বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করা হয় যার বৈশিষ্ট হলো পেঁকে যাওয়ার পরও এর কোষপ্রাচীর ভেঙ্গে যায় না ফলে দীর্ঘ সময় পরিবহন ও সংরক্ষনে এটা তরতাজা থাকে। অন্যদিকে শক্ত চিজ তৈরীর জন্য এক ধরনের জীবাণু ব্যবহার করা হয় যা সাধারনত বাছুরের পাকস্থলি থেকে সংগ্রহ করা হতো; বর্তমানে জি.এম. পদ্ধতিতে বিশেষ ধরনের ফঙ্গাস তৈরী করা হয়েছে যার সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ শক্ত চিজ তৈরী করা হচ্ছে।

জি.এম. ফুডের শ্রণী বিন্ন্যাসঃ

Sponsored:

জি.এম.(GM) কোষ বলতে এমন কোষকে বুঝায় যার জিনকে পরিবর্তন করা হয়েছে। এই পরিবর্তন বিভিন্ন ভাবে হতে পারে, যেমন-জেনেটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (GE) এর মাধ্যমে যেখানে কোষ থেকে জিনকে স্থানান্তর বা অপসারন করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে Recombinant DNA বা rDNA পদ্ধতিও বলা হয়। আবার Transgenic পদ্ধতিতে ভিন্ন প্রজাতির কোন কোষ থেকে জিন সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করে নতুন কোষ তৈরী করা হয়। “বিটি কর্ন-Bt corn” (Bacillus thuringiensis) এক ধরনের জি.এম. উদ্ভিদ যা Transgenic পদ্ধতিতে প্রাপ্ত, কারণ এর জিন ব্যাকটেরিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিকে Transgenic পদ্ধতি বলতে কোষের এক জিন থেকে অন্য জিনে DNA স্থানান্তর করাকে বুঝাত। কিন্তু এখন Transgenic পদ্ধতি বলতে প্রাণী বা ব্যাকটেরিয়া থেকে DNA সংগ্রহ করে উদ্ভিদ কোষে স্থানান্তরকে বুঝায়। জি.এম. পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি বা টমেটো উদপাদনের জন্য মাছের দেহ থেকে জিন সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। অবশ্য অনেকেই এ পদ্ধতিকে নৈতিক ভাবে সঠিক নয় বলে মনে করেন এবং এ ধরনের খাদ্য শস্য মানবদেহের জন্য সম্পূর্ন নিরাপদ বলেও মনে করছেন না। এ নিয়ে এখনও বিস্তারিত গবেষনার প্রয়োজন রয়েছে।

জেনারেশন অনুযায়ি জি.এম. ফুডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

প্রথম জেনারেশন: এ জেনারেশনে প্রচলিত খাদ্য শস্যের উন্নত জাত তৈরী করা হয়, যেমন-আগাছা প্রতিরোধক, পোকামাকড় প্রতিরোধক, বৈরি আবহাওয়া প্রতিরোধক ইত্যাদি।

দ্বিতীয় জেনারেশনঃ এ জেনারেশনের শস্যে কিছু খাদ্য গুনাগুন সংযুক্ত করা হয়, যেমন- গবাদি পশুর খাদ্যের পুষ্টিমান বাড়ানো হয়।

তৃতিয় জেনারেশনঃ এ জেনারেশনে ফর্মাসিউটিক্যাল, জৈব-জ্বালানী ও খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য কাজ করা হয়।

জি.এম. ফুড ভোক্তাদের কি ভাবে সহায়তা করতে পারেঃ

বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা যায় উন্নত বিশ্বের শিল্প কারখনা প্রচুর জি.এম. ফুড উৎপাদনের পক্ষে, কারণ  অতিরিক্ত রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার কম হওয়াতে জি.এম. ফুডের উৎপাদন খরচ অনেক কম। মুলত উৎপাদনের যেকোন সাশ্রয়ের সুবিধাই ভোক্তা পেয়ে থাকেন। জি.এম. পদ্ধতিতে  উৎপাদিত খাদ্যে পুষ্টিমান সংযোজনও ভোক্তার জন্য একধরনের বাড়তি সুবিধা- "Golden Rice" যার চালের মধ্যে ভিটামিন-এ ও লৌহের প্রধান উৎস বেটাক্যারটিন রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভিটামিন-এ ও লৌহজাত খাদ্যের অভাবে অন্ধ-শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার অধিক বেশি দেখা যায়। এসব দেশে "Golden Rice" কে প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে শিশুর অন্ধত্ব ও মাতৃ-মৃত্যুর হার অধিকংশে কমানো সম্ভব। অনেক অনুন্নত, দরিদ্র ও জনবহুল দেশে প্রতি বছর খাদ্যাভাবে অনেক লোক মারা যাচ্ছে। জি.এম. পদ্ধতিতে অধিক খাদ্য উৎপাদন করে এসব খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা সহজ।

জি.এম ফুড কতটা স্বাস্থসম্বতঃ

Sponsored:

অধিকাংশ স্বাস্থ ও পুষ্টিবিদরাই জি.এম. ফুডের এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে একমত। দুধ, ডিম, গম, মাছ, বাদাম, সয়াবিন, খোলসযুক্ত মাছ ইত্যাদি খাদ্যের বিশেষ ধরনের প্রোটিন ৯০% এরও বেশি ফুড এলার্জির কারণ। সুতরাং সাধারনত যেসব খাদ্যে এধরনের প্রোটিন নাই সেসব খাদ্যে যদি এধরনের খাদ্য থেকে প্রোটিন সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করা হয়, তাহলে যেসকল লোক এধরনের প্রোটিনের জন্য ফুড এলার্জিক তারা না জেনে এসব খাদ্য গ্রহণ করে ফুড এলার্জিতে ভোগবে। এর প্রতিকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের FDA (Food and Drug Authority) বিধান করেছে যে, প্রত্যেক জি.এম. ফুড প্রস্তুতকারীকে এ সত্য মেন চলতে হবে যে তাদের উৎপাদিত পন্যে এলার্জিক কোন উপাদান সয়যোজন করা হয় নাই। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে উৎপাদিত পন্যের গায়ে ভোক্তাকে সতর্ককারী স্টীকার সংযুক্ত করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে কি জি.এম. ফুড বিক্রি হয়ঃ

ধারনা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বাজারে  ৬০% থেকে ৭০%  খাদ্যে জি.এম. উপাদান বিদ্যমান। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৮ সালে ৪৫ মিলিয়ন একর জমিতে জি.এম. ফুড উৎপাদন করা হয় যা ১৯৯৭ সালের চেয়ে ২৫০% বেশি। সাধারনত বড় বড় কৃষি বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো জি.এম. ফুড উৎপাদন করে থাকে যার প্রায় ২৫% ভুট্টার জমি, ৩০% সয়াবিনের জমি এবং ৪৫% তুলার জমি। ১৯৯৮ সালে সারাবিশ্বে ৬৯ মিলিয়ন একর জমিতে জি.এম. ফুড চাষ করা হয় যার মাত্র ১৫% জমি উন্নয়নশীল দেশের।

২০০০ সালে মিডিয়াতে জি.এম. সলমন সম্পর্কে অনেক সংবাদ প্রচারিত হয়। এধরনের মাছ সাধারন সলমনের চেয়ে আকারে দ্বিগুন হয় এবং দশগুন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়, যদিও ১০% থেকে ২৫% কম খাবার খায়। এসব সলমন উৎপাদনকারীরা দাবি করছে যে তাদের উৎপাদিত মাছ জীবানুমূক্ত এবং সাধরন পরিবেশে বংশবৃদ্ধি করতে পারে না।

ফ্লেভর সেভর  (The Flavr SavrTM) টমেটোঃ

প্রথম বানিজ্যিক ভাবে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদন পায় জি.এম. পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফ্লেভর সেভর টমেটো। Calgene নামে একটি কোম্পানি এটি প্রথম উৎপাদন করে যা যুক্তরাষ্ট্রের FDA ১৯৯৩ সালে অনুমোদন করে। অনুমোদনের এক বছর পরেই বাজারজাত শুরু হলেও জনগনের ব্যপক আপত্তি ও বিশেষ ধরনের পরিবহন ব্যবস্থার স্বল্পতার কারণে ১৯৯৭ সালে এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। উক্ত কোম্পানি নাম পরিবর্তন করে Monsanto নামে নতুন ভাবে বাজারযাত করতে শুরু করে যা তে পরিবহনের সমস্যা পরিহার করা সম্ভব হয়। কিন্তু এ ধরনের জি.এম. ফুড নিয়ে সৃস্ট বিতর্ক এখনো চলছে।

বিটি (Bacillus thuringiensis) কর্নঃ

টা এমন পদ্ধতি যার সাহায্যে ফসলের পোকা-মাকড় প্রতিরো ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। জি.এম. পদ্ধতির ইউরোপিয়ান ভু্ট্টা নিজেকে আভ্যন্তরিন পোকা ও পঙ্গপালের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। অপরদিকে এর উৎপাদন খরচও কম। মানুষের খাদ্য হিসেবে বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য বিটি কর্ন ১৯৯৫ সালে EPA USDA থেকে অনুমোদন পায়। অতি অল্প সময়ে বিটি কর্নের ব্যবহার নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পায়, ১৯৯৬ সালে যেখানে এর ব্যবহার ছিল মাত্র ১.৪% সেখানে ১৯৯৯ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৩০% যার জমির পরিমান প্রায় ২৬ মিলিয়ন একর।

ষ্টারলিংক কর্নঃ

ষ্টারলিংক কর্ন হলো কম্পানী ট্রেডমার্ক, নিজেরা পোকা দমনকারী বিশেষ ধরনের প্রোটিন Cry9C ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জি.এম. ভুট্টা উৎপাদন করে। অভিযোগ পাওয়া যায় যে Cry9C প্রোটিনে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক এলার্জি রয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে EPA (Environmental Protection Agency) কর্তৃক এর সত্যতা পাওয়া যায় এবং ষ্টারলিংকে শুধুমাত্র পশুখাদ্য ও মানব খাদ্য ছাড়া অন্যান্য কাজে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়। অবশ্য ২০০০ সালে কিছু পরিবর্তিত রূপে স্টারলিংক মানব খাদ্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছাড়া হয়।

এল-ট্রাইপতোফান (L-Tryptophan):

এল-ট্রাইপতোফানই সর্বপ্রথম জি.এম. ফুডের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে অধিক সতর্ক হওয়ার প্রয়োজনিয়তার কথা স্বরন করিয়ে দেয়। ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ জন জি.এম. ফুডের EMS (Eosinophilia Myalgia Syndrome)  বিষক্রিয়ায় মারা যায়। এসব খাবার প্রক্রিয়াতে জি.এম. ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু FDA মনে করে এদূর্ঘটনা  জি.এম. পদ্ধতির জন্য নয়, বরং খাদ্য বিশুদ্ধ করন প্রক্রিয়ার কোন এক ত্রুটির জন্যই হয়েছিল। অবশ্য এরপর থেকে সবধরনের খাদ্যের জন্যই উৎস নয় বরং গুনগত মান কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রনের উপর অধিক প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।

FDA EPA কিভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেঃ

জন সাধারন FDA এর প্রতি বিশ্বস করে যে তাদের অনুমোদাত খাদ্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর। গোমাংশ ও পোল্ট্রির নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব শুধুমাত্র USDA-এর আর বাকী সব আভ্যন্তরিন ও আমদানিকৃত খাদ্যের নিরাপত্তা প্রদানের দ্বায়িত্ব FDA পালন করে থাকে। প্রাথমিক ভাবে EPA পোকা-মাকড় দমনের মান নির্ধারন করে থাকে এবং EPA কর্তৃক নির্ধারিত মান খাদ্যের জন্য যথাযথ ভাবে পালিত হচ্ছে কিনা FDA তা পর্যবেক্ষন করে থাকে। USDA-APHIS সার্বিক ভাবে মাঠ পর্যায়ে জি.এম. শস্যের উপর নিয়ন্ত্রন ও পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

জি.এম. ফুডের ভবিশ্যতঃ

জি.এম. ফুড নিয়ে বরাবরই অনেক দ্বিমত রয়েগেছে। কিন্তু গবেষকরা খাদ্য শস্য উৎপাদনের নতুন নতুন পদ্ধতি বেরকরার চেস্টা করে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোপের বিজ্ঞানীরা প্রচলিত জিন ও পারমানবিক জীববিদ্যা সংক্রান্ত নতুন এক পদ্ধতি  MAS (Marker-Assisted Selection) নিয়ে কাজ করছে যার সাহায্যে রং, মাংশের গুনগতমান, পরিপাক পদ্ধতি নিয়ন্ত্রনকারী জিনকে নিয়ন্ত্রন করে জি.এম. ফুড  উৎপাদন করা হবে। এই পদ্ধতির প্রতিশ্রুত বিষয় হলো Transgenic DNA ব্যবহার না করে বিদ্যমান DNA ব্যবহার করা হবে, ফলে জি.এম. ফুড সংক্রান্ত দ্বিমত অনেকটাই কমে যাবে।
References

মাটিতে বসে অাহারঃ ধর্ম, বিজ্ঞান ও আধুনিকতা

মাটিতে বসে খেলে শরীরের এত উপকার! আগে জানতেন কি?
মাটিতে বসে খেলে- মাটিতে বসে খেলে পাছে সম্মান যায় তাই ডাইনিং টেবিলে বসে যারা লাঞ্চ-ডিনার সেরে থাকেন, তারা বরং ভালোর চেয়ে নিজেদের ক্ষতিই করছেন বেশি। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে টেবিল-চেয়ারে বসে খাবার খেলে পেট ভরে ঠিকই, কিন্তু শরীরের কোনও মঙ্গল হয় না।

বরং নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। অন্যদিকে মাটিতে বাবু হয়ে বসে খেলে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে শরীরও রোগ মুক্ত হয়। বোল্ডস্কাই এর প্রতিবেদন অনুযায়ী নিচে মাটি বসে খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

হার্টে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: হাঁটু মুড়ে বসে থাকাকালীন শরীরের উপরের অংশে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্টে কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে হ্রাস পায় কোনও ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।

সারা শরীরে রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটে: আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিটি অঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়াটা জরুরি। যত এমনটা হবে, তত রোগের প্রকোপ কমবে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শরীরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে বাবু হয়ে বসে থাকাকালীন সারা শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের চলাচল বেড়ে যায়।

স্ট্রেসের মাত্রা কমে: শুনতে আজব লাগলেও একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাটিতে বসে থাকলে শরীর এবং মস্তিষ্কের অন্দরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। ফলে মানসিক অবসাদ তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রেসর মাত্রাও কমতে শুরু করে।

মাটিতে বসে খেলে একাধিক আসন করা হয়: মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমরা নিজেদের অজান্তেই একাধিক আসন, যেমন- সুখাসন, সোয়াস্তিকাসন অথবা সিদ্ধাসন করে ফেলি। ফলে মাটিতে বসে খাওয়ার সময় পেট তো ভরেই সেই সঙ্গে শরীর ও মস্তিষ্ক, উভয়ই ভিতর থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

শরীর শক্তপোক্ত হয়: মাটিতে বসে খাওয়ার অভ্যাস করলে থাই, গোড়ালি এবং হাঁটুর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শিরদাঁড়া, পেশি, কাঁধ এবং বুকের ফ্লেক্সিবিলিটিও বাড়ে। ফলে সার্বিকভাবে শরীরে সচলতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি নানাবিধ রোগও দূরে থাকে।

হজম ক্ষমতার উন্নতি হয়: বাবু হয়ে বসে খেলে হজম ক্ষমতার উন্নতি হয়। তাই যাদের বদ হজমের সমস্যা রয়েছে বা যারা প্রায়শই গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন তাদের ভুলেও টেবিল চেয়ারে বসে খাওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে মাটিতে বসে পাত পেরে খাওয়া উচিত।

আসলে বাবু হয়ে বসে খাওয়ার সময় আমরা কখনও আগে ঝুঁকে পরি, তো কখনও সোজা হয়ে বসি। এমনটা বারে বারে করাতে হজম সহায়ক ডায়জেস্টিভ জুস'র ক্ষরণ বেড়ে যায়।

ফলে হজম প্রক্রিয়া খুব সুন্দরভাবে হতে থাকে। এখানেই শেষ নয়, মাটিতে বসে থাকার সময় আমাদের শিরদাঁড়ার নিচের অংশে চাপ পরে ফলে স্ট্রেস লেভেল কমে গিয়ে সারা শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

আয়ু বৃদ্ধি পায়: মাটিতে বসে খেলে শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে কোনও ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে বলা হয়েছিল যারা কোনও সাপোর্ট ছাড়া মাটিতে বসে থাকতে থাকতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরতে পারেন, তাদের শরীরে ফ্লেক্সিবিলিটি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আয়ু বৃদ্ধি পায়।

আর যারা এমনটা করতে পারেন না, তাদের আয়ু অনেকাংশেই হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, এই গবেষণাটি ৫১-৮০ বছর বয়সীদের মধ্যে করা হয়েছিল।

ব্যথা কমে: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমরা মূলত পদ্মাসনে বসে থাকি। এইভাবে বসার কারণে পিঠের, পেলভিসের এবং তল পেটের পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সারা শরীরের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে সব ধরনের যন্ত্রণা কমে যেতে সময় লাগে না।

ওজন কমে: মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমাদের ভেগাস নার্ভের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে পেট ভরে গেলে খুব সহজেই ব্রেনের কাছে সে খবর পৌঁছে যায়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। এমনটা যত হতে থাকে তত ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও কমে।

প্রসঙ্গত, আমাদের পেট ভরেছে কিনা সেই খবর ব্রেনের কাছে পৌঁছালেই আমাদের খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। আর এই খবর মস্তিষ্ককে পাঠায় ভেগাস নার্ভ।

Wednesday, March 13, 2019

স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি এর বাস্তব ব্যাবহার




Static Electricity


স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটি কি এবং এর ব্যাবহার কোথায়?

যদি শীতের শুষ্ক দিন হয়, দেখবেন আপনার মাথার চুল আঁচড়িয়ে বারবার চেষ্টা করেও সমান করতে পারছেন না; সোজা হয়ে দাড়িয়ে যাচ্ছে। অথবা সোয়েটার খোলার পর শরীরের লোমগুলো সোজা হয়ে থাকছে ও চট্‌মট্‌ শব্দ করছে। অন্ধকার ঘরে হলে আলোও দেখতে পাবেন। এমন আরও অনেক উদাহরণ পাবেন যেখানে স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটি উৎপন্নের জন্য এমনটি হয়ে থাকে।

ইলেক্ট্রিসিটিকে প্রাথমিক ভাবে স্ট্যাটিক ও ডাইনামিক, দু'ভাগে ভাগ করা হয়। আসলে সব ইলেক্ট্রিসিটি একই। সাধারণত আমরা চারপাশে ইলেক্ট্রিসিটির যে হাজারও ব্যাবহার দেখছি, এ সবই ডাইনামিক ইলেক্ট্রিসিটি। স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটির সাথে আমাদের পরিচিতি বেশ কম; এর ব্যবহার আরও কম। সহজ করে বললে যে ইলেক্ট্রিসিটি উৎপাদনের পর  স্থানান্তরিত হতে পারে তাকে ডাইনামিক ইলেক্ট্রিসিটি বলা হয় আর যে ইলেক্ট্রিসিটি উৎপাদনের পর যা কিছু করার জন্মস্থান থেকেই করে বা কোন কিছু না করেই নিঃশেষ হয়ে যায়। অনেকটা কমপ্লিট প্যারালাইস্ড ইলেক্ট্রিসিটি বলা যেতে পারে।


 স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটির বাস্তব কয়েকটি ব্যবহার:

 

ধূলা পরিষ্কার করণ: 

কোন নির্দিষ্ট কক্ষের বাতাস বিশুদ্ধ বা ধূলা মুক্ত করনের জন্য, বিশেষ কোন মেশিন বা যন্ত্রপাতি স্পর্শ না করে পরিষ্কার করনে ইত্যাদি। এক্ষেত্রে স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহার করে ডাস্ট বা ধূলাকে বৈদ্যুতিক চার্জ করা হয় এবং বিপরীত চার্জের অন্য একটি প্লেট দ্বারা আকর্ষণ করে সরিয়ে ফেলা হয়। কারণ আমরা জানি বিপরীত চার্জ একে অপরকে আকর্ষণ করে।

অনুরূপ পদ্ধতি শিল্প কারখানায় উৎপাদিত অতিরিক্ত স্মোক বা ধূয়া পরিশোধনের জন্যও ব্যবহার করা হয় যা মূলত 'হোম এয়ার পিউরিফাইয়ার' এর মত, শুধু বৃহৎ আকারে ব্যবহার করা হয়।


ফটোকপি ও প্রিন্টিং: 

ফটোকপি মেশিন বা ডাস্ট ইন্ক ব্যবহৃত প্রিন্টারে স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটি ব্যাবহার করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত ইন্ক বা কালির বৈশিষ্ট্য হল ইহা চার্জ হতে পারে। অপর দিকে প্রিন্টিং রোলার বা ড্রাম বিপরীত চার্জ-যুক্ত থাকে, ফলে শুধুমাত্র লেখা বা কপির জন্য অংশটুকু ড্রাম কালি ধরে রাখে ও কাগজের উপর ছাপ দেয়।



গাড়ী রং করণ: 


আপনার গাড়ীর সুন্দর ঝকঝকে তকতকে ও সকল স্থানে সমান অনুপাতের রং করার জন্য স্ট্যাটিক ইলেকপ্রিসিটি ব্যবহার করা হয়। গাড়ী পজিটিভ চার্জ-যুক্ত করা হয়, আর স্প্রে-কৃত রং নেগেটিভ চার্জ-যুক্ত করা হয়। ফলে রং আকর্ষিত হয়ে গাড়ি রঙ্গিন হয়ে উঠে। 

বর্তমানে বিভিন্ন অমসৃণ পৃষ্ঠ বিশিষ্ট ও মূল্যবান যন্ত্রপাতিও অনুরূপ পদ্ধতিতে রং করা হয়। এক্ষেত্র রং এর অপচয় কম, গুনগত-মান ভাল ও পরিবেশের কম ক্ষতি করে।

এসকল ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক সার্কিট ব্যবহার করে স্ট্যাটিক ইলেক্ট্রিসিটি উৎপন্ন ও নিয়ন্ত্রণ করে কাজ করা হয়।

আরও জানতে পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করুণ:


Sponsored:

বৈচিত্রময় মরুভুমির আচরণ ও বৈশিষ্ট অবলোকন

সোনালী বালির মরুভুমি
সোনালী বালির মরুভুমি
ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে।কোথাও ঠাণ্ডা, কোথাও গরম, আবার কোথাও বা নাতিশীতোষ্ণ। কোথাও বরফে আবৃত, কোথাও মরু ভূমি। কোথাও সূর্যের আলো অতিরিক্ত, কোথাও সূর্যের আলো অতিরিত্ককম। ভূ-পৃষ্ঠর বিচিত্রতার সাথে সাথে জীব বৈচিত্র্যেরও অনেক তারতম্য ঘটে থাকে। তেমনি মরুভূমির জীববৈশিষ্টের রয়েছে হাজারও রকমফের। এখানকার মানুষ, পশুপাখি, জীবজন্তু, গাছপালা প্রকৃতির সাথে তালমিলিয়ে চলার জন্য প্রতিমূহুর্তে রূপ পরিবর্তন করে থাকে।

Sponsored:



মরুভূমির তাপমাত্রা রাতের বেলা কমে যায় এবং দিনের বেলা সূর্যের তাপ অতিমাত্রায় বেড়ে যায়। বিশ্বের সব চেয়ে বড় মরুভূমি সাহারা। এর আয়তন প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন বর্গ কিলো মিটার এবং সর্বোচ্চ রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা ৫৮ ডিগ্রি সে: গ্রে:। সাহারাসহ অত্র অঞ্চলের জীবনযাত্রা অতিমাত্রায় কষ্ট সাধ্য। কিন্তু জীব এখানেও জীবন ধারণ করছে। মানুষ এখানে প্রকৃতিকে শুধু জয়ই করেনি, প্রকৃতির সাথে চ্যালেঞ্জ করে তৈরি করেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ইমারত- দুবাই এর বুরুজ খলিফা। মরুভূমিতে বাস করেই মিশরের ফেরাউন নিজেকে সৃষ্টিকর্তা বলে দাবি করেছিল। এখানেই পৃথিবীর সর্ব শ্রেষ্ঠ মানবের জন্ম।


অতিরিক্ত পানি জমা রাখার জন্য উদ্ভিদের মূল
অতিরিক্ত পানি জমা রাখার জন্যই উদ্ভিদের এমন মূল।
বিজ্ঞানীগণ ধারনা করেন হাজার হাজার বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাহারা মরুর সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন আর্কিওলজিক্যাল ও চিত্রকর্মের প্রমাণ থেকে ধারনা করা হয় প্রায় ৫০০০ বছর আগে এখানে যথেষ্ট ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ এবং তৃণভোজী প্রাণীর বিচরণ ছিল। ২ থেকে ৩ হাজার বছরের পুরাতন আদিম সাইপ্রাস জাতীয় কিছু গাছ রয়েছে যা মরুর বালু থেকেও পানি সংগ্রহ করে বছরের পর বছর বেঁচে থাকতে পারে।


বিশ্ব মানচিত্র লক্ষ্য করলে দেখা যায় ট্রপিক অঞ্চলে বছরের অধিকাংশ সময় সূর্য সরাসরি তাপ দেয়াতে এ অঞ্চলের অধিকাংশ স্থান মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।কিনত হিমালয়ের হিমবাহ ও অধিকাংশ নদী ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ, মায়ানমার অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে এ অঞ্চল মরুভূমি হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে।দিনের বেলা অতি-তাপের ফলে বাষ্প সৃষ্টি হয়ে উপরে উঠে যায় এবং রাতের বেলা তাপ কমে যাওয়ার ফলে বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে নীচে নেমে আসে। ফলে মরুভূমি দিনে গরম এবং রাতে ঠাণ্ডা।


নরম শরীর সূর্য্যের তাপ থেকে রক্ষার জন্য দেহাবরণ
নরম শরীর সূর্য্যের তাপ থেকে রক্ষার জন্যই এমন দেহাবরণ।

অন্যান্য অঞ্চলের মত এখানেও বিভিন্ন জীব বাস করে, কিন্তু পরিবেশের সাথে খাপ-খাওয়ানোর জন্য জীবন যাত্রা ও শারিরীক গঠনে রয়েছে বিভিন্ন বিচিত্রতা।মরু অঞ্চলের জীবজন্তুর মধ্যে সাধারণত দেখা যায় হায়েনা, ফ্যানিক ফক্স, বিভিন্ন ধরনের ইঁদুর, টিকটিকি,কচ্ছপ,সাপ, বিছা, বিভিন্ন ধরনের পাখি প্রভৃতি। দিনের বেলা অধিক তাপ থেকে বাঁচার জন্য সূর্যের আড়ালে অর্থাৎ গর্তের ভিতরে থাকে এবং রাতের বেলা বের হয় শিকার ধরার জন্য। 


সঙ্কোচিত দেহের মরু উদ্ভিদ
সঙ্কোচিত দেহের মরু উদ্ভিদ
মরু অঞ্চলের গাছপালা ও জীবজন্তু প্রতিকুল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য নিজ থেকেই অসাধারণ সব উপায় বের করে নেয়, যেমন- ক্যাকটাস বা শিলা উদ্ভিদ তাদের মাংসল টিসুর মধ্যে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য অতিরিক্ত পানি জমা করে রাখতে পারে।এদের এমন অগভীর মূল ও শিকড় থাকে যা অতি অল্প সময়ে বৃষ্টির পানি মাটি থেকে সংগ্রহ করতে পারে। আবার অনেক ক্যাকটাস জাতিয় উদ্ভিদ যাদের পাতার বিকল্প শুধু কাণ্ড আছে, কোন পাতা বা ডাল-পালা নাই।এদের আকৃতি শুধু লম্বা বা উপরের দিকে হয় এবং গায়ের রং হয় গাঢ় সবুজ। এতে দিনের প্রথম ও শেষ ভাগে যখন সূর্যের তাপ কম থাকে তখন পাতার পরিবর্তে গায়ের চামড়ায় প্রয়োজনীয় খাদ্য তৈরি করে এবং দিনের মধ্যভাগে যখন তাপমাত্রা অধিক তখন লম্বা, আয়তনে ছোট, পাতা বা অতি-সংবেদনশীল অংশ কম থাকায় অর্থাৎ আকারে সংকোচিত থাকায় অতি-তাপের হাত থেকে সহজেই রক্ষা পায়। আবার কোন কোন উদ্ভিদের আকৃতি এমন যে বৃষ্টি বা রাতের কুয়াশার পানি যেন সহজেই গাছের গোঁড়ায় পৌছায় তেমন ব্যবস্থা রয়েছে।


পানি গড়িয়ে গোড়য় যাওয়ার জন্য  এমন আকৃতি
পানি গড়িয়ে গোড়য় যাওয়ার জন্য ও পাতার কাজ কান্ডতেই
 সেরে নেওয়ার  জন্য এমন আকৃতি।
যেসব উদ্ভিদের পাতা আছে সেগুলোও এফিমেরাল জীবন চক্র পদ্ধতিতে বছরের পর বছর বেঁচে আছে।অর্থাৎ কম্পিউটারের বড় ফাইলকে  ZIP করে ছোট আবার প্রয়োজনীয়  সময় unZIP করে বড় করার মত- যখন তাপমাত্রা অধিক ও বৃষ্টির পরিমাণ কম তখন সমস্ত পাতা ও ডাল-পালার নরম অংশ ঝড়ে যায় ফলে আকারে ছোট হয়ে শুধু কাণ্ড বা শাখা-কাণ্ড সঞ্চিত খাবার খেয়ে  বেঁচে থাকে, আবার বৃষ্টির সময় অতি তাড়াতাড়ি নতুন পাতা গজায় ও পরিপূর্ণ জীবনে ফিরে আসে।


লেজই ছাতার কাজ করছে
লেজই ছাতার কাজ করছে
মরুভূমির পাখি বা বড় আকারের প্রাণী অতি গরমের সময় মাইগ্রেট করে গাছপালা সমৃদ্ধ অঞ্চলে বা পাহাড়ের উপর চলে যায়।কিন্তু আকারে ছোট প্রাণী সহজেই অন্যত্র যেতে পারে না, তবে তারা তাদের চারপাশের পরিবেশ নিয়নত্রন করে বা এর সাথে নিজেদের খাপখাইয়ে নেয়।পাখি দিনের বেলায় না উড়ে শক্তি খরচ কমিয়ে দেয়।অন্যান্য সরীসৃপ ও পোকামাকড় দিনের বেলায় গর্তের ভিতর থাকে এবং রাতে খাদ্য সংগ্রহে বের হয়।

দুষ্কর পথ চলা
গরম বালু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পা উচু করে বিশ্রাম নিচ্ছে

কোন কোন প্রাণীর গায়ের বিশেষ আকৃতি প্রতিকুল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য উপযোগী। কোন কোন প্রাণী আবার বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে দুষ্কর পথ চলে।


মরুভুমির ব্যাঙ
মরুভুমির ব্যাঙ



Sponsored:
মরুভূমির ব্যাঙ বছরের অধিকাংশ সময়ই মাটি বা বালির নীচে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। যখন বৃষ্টি হয়  তখন বের হয়ে আসে এবং যে স্বল্প সময় পায় অর্থাৎ প্রায় এক সপ্তাহ বৃষ্টির পানি জমা থাকে সেই সময়ের মধ্যেই ডিম দেয়, বাচ্চা ফুটে, বাচ্চা বড় হয়ে পুর্নাঙ্গ ব্যাঙে পরিণত হয়ে আবার পানি শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বেই মাটির নীচে লোকায়ে যায়।এভাবেই নিজেদের বাঁচিয়ে রাখে বছরের পর বছর। 


মরুভুমির বন্য ফুল
মরুভুমির বন্য ফুল





Sunday, March 10, 2019

মানব শরীর ভবিষ্যতের পাওয়ার হাউজ


মানব শরীর হতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ



মানব শরীর হতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ  তৈরির পাওয়ার হাউজ। কথাটি শুনতে কেমন সিনেমা-টিক সিনেমা-টিক মনে হলেও বিজ্ঞানীরা কিন্তু  বেশ সিরিয়াসলিই চিন্তা করতে শুরু  করছেন। শরীরের তাপ, নরাচড়া, বিপাক, কম্পন এ সব থেকে ক্ষুদ্র আকারে শক্তি উৎপন্ন করা এক অর্থে বিরোপ জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে ভাল খবরই বটে।


বিদ্যুৎ  কি থেকে তৈরি হয়? কি ভাবে তৈরি হয়? সহজ উত্তর বিদ্যুৎ তৈরি করতে নির্দিষ্ট কোন কাঁচামালের প্রয়োজন হয় না। এটা শুধু এক প্রকার শক্তিকে অন্য প্রকারে রূপান্তর করে মাত্র। এই রূপান্তরিত শক্তির প্রবাহই হল বিদ্যুৎ। আর এই রূপান্তর বিভিন্ন উপায়ে হতে পারে যেমন- তাপ, চাপ, আলো, কম্পন, ঘূর্ণন, পারমানবিক বা রাসায়নিক বিক্রিয়া ইত্যাদি। বিদ্যুৎ  তৈরির অধিকাংশ উৎসই মানব শরীরে উপস্থিত। 


কিন্তু প্রশ্ন বিদ্যুৎ তৈরির এত এত উৎস থাকতে কেন এই ক্ষুদ্র চিন্তা? এই ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ আমাদের কি কাজে আসতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এটাকে ক্ষুদ্র ভাবছেন না। আর এর প্রয়োজনও কম মনে করেন না।আসলে যেকোনো কিছুর প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব  ক্ষুদ্র বা বৃহৎ আকার বা পরিমাণের উপর নর্ভির করে না। প্রাপ্যতার নির্দিষ্ট   স্থান, কাল ও পরিমাণই মুখ্য বিষয়।


মানব শরীর এখন আর শুধুমাত্র মানব শরীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাই। যান্ত্রিক মেশিনপত্রও এখন মানব শরীরের অংশ বা প্রতিস্থাপিত অংশে পরিণত হচ্ছে। পেস-মেকার মেশিন, হেয়ারিং ইন্সট্রোমেন্ট, কৃত্রিম চোখ- এসব গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য বিদ্যুৎ অপরিহার্য। দুর্গম মরু বা পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন অভিযানের সময় জিপিএস সিস্টেম বা মোবাইল জাতিয় যোগাযোগ যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য ব্যাটারির রি-চার্জে প্রয়োজন বিদ্যুৎ। আর এসব ক্ষুদ্র কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের জন্য মানব শরীরই হতে পারে অধিক নির্ভরশীল উৎস।



প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে  প্রযুক্তিবিদরা এখন "পিজো-ইলেক্ট্রিসিটি" উৎপাদনের কথা চিন্তা করছেন; যার অর্থ হল চাপ শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করা। পিজো-ইলেকট্রিক পদার্থ এমন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন যার উপর চাপ প্রয়োগ করলে ভিতরে ক্ষুদ্র শক্তি উৎপন্ন হয়। পদার্থের এই বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে একটি অসাধারণ উদাহরণ স্থাপন করা সম্ভব। আর সেটা হল আমাদের হৃদ-পিণ্ড তার চাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একা একাই কৃত্রিম পেস-মেকারকে শক্তি সরবরাহ করতে পারে। এই ধরনের যন্ত্রের খুবই সামান্য পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়- এক ওয়াটের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ পরিমাণ এবং এতে ব্যবহৃত ব্যাটারি কয়েক বছর পর্যন্ত চলতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটির  ডা. আমিন করিমি বলেন- কৃত্রিম পেস-মেকার হার্ট-বিট থেকে যে পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করতে পারে  তা দিয়ে সারা জীবন চলতে পারে।

 সম্প্রতি লস-এঞ্জেলস এর"এমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন"  জানিয়েছেন একটি পিজো-ইলেকট্রিক সিরামিকের টুকরার  পুরুত এক ইঞ্চির শত ভাগের এক ভাগ এবং একটি কৃত্রিম পেস-মেকার চলার জন্য যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন তার দশ গুণ বেশি শক্তি বুকের কম্পন থেকে পাওয়া যেতে পারে।


শরীরের বাহিরেও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা যেতে পারে। ন্যানো-প্রযুক্তি গবেষকগণ "পাওয়ার শার্ট" নামে জিংক-অক্সাইড ও সোনার ক্ষুদ্র ডোরা বিশিষ্ট  সুতা দ্বারা শার্ট তৈরি করছেন যা চলাচলের সময় একে অন্যের সাথে ঘর্ষণে বিদ্যুৎ তৈরি করবে। জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি'র প্রফেসর ঝং লিন্‌ ওয়াং বলেন আমরা নরম, ভাজ করা ও পরিধান যোগ্য বিদ্যুতের উৎস সরবরাহ করতে পারি যা  হাটার সময়  প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে।


ব্রিটেনের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির ড: মাইকেল পজ্জি "পিজ্জিক্যাটো" নামে একটি শক্তির উৎস তৈরি করেছেন যা  দিয়ে স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ডিভাইস চালানু সম্ভব। যন্ত্রটি হাঁটুতে সংযোজন করা যায়, এর বাহিরে একটি রিং ও কেন্দ্রীয় হাব থাকে। হাঁটার সময় রিং ঘুরবে ও হাবের সাথে সংযোজিত পিজো-ইলেকট্রিক বাহু  বিদ্যুৎ  তৈরি করবে।


ব্রিশটোল ইউনিভার্সিটির মি. স্টিভ বারোস্‌ হাটার সময় "উপর-নীচ" চলাচলের এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন।  এমনকি আমাদের প্রতি কদম হাটাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। লবণাক্ত এক ধরনের বিশেষ তরল মাইক্রোস্কোপি আকারে জুতার সোলের ভিতরে স্থাপন করে প্রতি পা থেকে দুই ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এ দিয়ে স্মার্ট-ফোন ও ট্যাবলেট চালানো যাবে।

প্রতি কদম হাটাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব



বিজ্ঞানীরা মনে করেন পিজো-ইলেকট্রিক ব্যাটারি হাইকিং হিলের ভিতর স্থাপন করে হাইকারদের জন্য জরুরী অবস্থান নির্নয়ক যন্ত্রের  বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেতে পারে। তেমনি "থার্মোইলেকট্রিক" যার এক প্রান্ত গরম ও অন্য প্রান্ত ঠাণ্ডা করলেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়-এমন শার্ট তৈরি করে শরীরের তাপকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব ও  ব্যবহারকারীর তাপ শোষণ করার ফলে সে ঠাণ্ডা অনুভব করবে।


এমনি অনেক ন্যানো-জেনারেশন সম্ভব যা ভবিষ্যতে আমাদের প্রয়োজনীয় জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারে।


ভাল লাগলে দেখতে পারেনঃ

মানব শরীরে বিদ্যুৎ তৈরির কৌশল.




                          

Saturday, March 9, 2019

আপনার ফোন দিয়েই গাড়ি বা প্রয়োজনীয় বস্ত খুঁজে বের করুন।

Tracking Device
চিত্র: বিভিন্ন রঙের ট্র্যাকার-ব্রাভো

আপনার ফোন দিয়েই  গাড়ি বা প্রয়োজনীয় বস্ত খুঁজে বের করবেন কিভাবে?

আপনি কি কখনও পার্কিং লটে আপনার গাড়ী হারিয়েছেন? এটা হতেই পারে। আপনি গাড়ি পার্ক করে কেনাকাটা করার জন্য গেলেন, আর যখন ফিরে এলেন, আপনি মনে করতে পারছেন না আপনার গাড়ী কোথায়। হযতো আপনি কাছাকাছিই আছেন, কিন্ত গাড়ি খুজে পাচ্ছেন না, কি করবেন? বারবার আপনার গাড়ির চাবির উপর প্যানিক বাটন ক্লিক করবেন। এতে হয়তো এলার্ম বন্ধ হয়ে যাব। এটা হতাশাজনক হতে পারে, বিশেষ করে কোন গরম বা বৃষ্টির দিনে হলে তো আরও বিরক্তিকর হবে।
 
কিন্ত সমাধান কি; না, আপনি আপনার গাড়ির জন্য ট্র্যাকে রাখা একটি ব্যয়বহুল জিপিএস সিস্টেম ক্রয় করার প্রয়োজন হবে না। কেবল ছোট একটি ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যাবহার করে সহজেই আপনার গাড়ী ট্র্যাক করতে পারবেন। স্বল্প খরচে বাজারযাত করার লক্ষ্যে প্রযুক্তিবিদরা এ নিয়ে কাজ করছেন।
এ যন্ত্রটার নাম দেয়া হয়েছে ট্র্যাকার-ব্রাভো। এটি খুব সহজ, বিনামূল্যে TrackR অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করে ফোনের সাহায্যেই আপনার গাড়ি ট্র্যাক করতে পারবেন।
 
আপনি আপনার ব্রিফকেস, মানিব্যাগ, আপনার সর্বশেষ কারিগরি গ্যাজেট এবং অন্য যেকোন কিছুর সাথে এটা সংযুক্ত করে হারানো বা খুজে না পাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন। সেকেন্ডের মধ্যে আপনার অনুপস্থিত আইটেম সনাক্ত TrackR অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে জীবনকে আরও সহজ করে দেব।
 
এতে সময় ও টাকা দু’টোই সাশ্রয় হবে।

সত্যিই ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইন্স ও টেকনোলজি জীবনকে সহজ করে দেয়।


Wednesday, September 20, 2017

গুগল সম্পর্কে যে ১০টি তথ্য হয়তো আপনার জানা নেই

গুগলের চিন্তা

গুগল আসার আগের জীবনের কথা কি আপনি মনে করতে পারেন? তখন আপনি কি করতেন, যখন হঠাৎ করে, তাড়াতাড়ি কোন বিষয়ে তথ্য খুঁজে বের করার দরকার হতো?


গুগল সম্পর্কে অজানা সব তথ্য


wazipoint Blog

If you like this post, do share for your friends.
Thinking valuable any comments put in below.
Have a better idea, write a post and mail to: wazipoint@gmail.com

Thursday, June 29, 2017

কিভাবে টুইটারে আপনার ব্লগ পোস্ট প্রচার করবেন?

How to Promote Your Blog Posts on Twitter
প্রধানতম সামাজিক নেটওয়ার্ক যেখানে ব্লগ পোষ্ট শেয়ার করা যায়

লোকেরা যাতে বেশি বেশি  আপনার ব্লগ পোষ্ট পড়ে তার জন্য আপনি  টুইটার ব্যবহার করতে পারেন।

আপনি যদি কোনও ব্লগ পোস্ট লিখেন তবে এটি পড়ার জন্য কেউ নেই, এটি কি বিক্রি বা  প্রচার হবে? না! 

ধরুন,  আপনি সেরা লেখককে নিয়োগ করেছেন, সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন, মূল অন্তর্দৃষ্টিগুলির লোড অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং চোখের পপিং ইমেজগুলির সাথে এটি একত্রিত করেছেন, তবে যদি সেই ব্লগ পোস্টটি সঠিকভাবে প্রচার করা না হয় তবে এটি কেই পড়তে পারবে না। যার মানে এটি আপনার ব্যবসার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। 

 আপনার ব্লগ পোস্টগুলি প্রচার করার জন্য টুইটার একটি চমত্কার হাতিয়ার হতে পারে, এমনকি যদি আপনার কাছে ডলার বা টাকা খরচ করতে না হয়। টুইটারে দ্রুত গতি, তথ্য ভাগ করার সংস্কৃতি এটি ব্লগার, বিপণনকারী এবং ব্র্যান্ড পরিচালনাকারিদের জন্য সঠিক দর্শকদের সামনে তাদের সামগ্রীক পোষ্ট পেতে একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে। 


কিন্ত কিভাবে: 

১. ঘন-ঘন আপনার ব্লগ পোস্টে টুইট করুন। দ্বিতীয় আপনি যখন আপনার ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করেন, তখন এটা টুইট করুন। তারপর কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করুন (ছয় থেকে ২৪এর মধ্যে যে কোন জায়গায়) এবং আবার টুইট করুন। তারপর কয়েক দিন অপেক্ষা করুন এবং আবার টুইট করুন। সময় ভাগ করুন, তবে সর্বদা কৌশলগত হোন: প্রতিবার যখন আপনি ব্লগ পোস্টটি টুইট করেন তখন বিভিন্ন বাক্যাংশ, উদ্ধৃতি এবং শিরোনামগুলি ব্যবহার করুন এবং আপনার টুইটগুলি এমন সময় দিন যাতে তা আপনার দর্শকদের অনলাইনের সাথে মিলিত যায়।

২. সৃজনশীল শিরোনাম এবং CTAs লিখুন। যেসব মানুষ আসলে আপনার ব্লগ পোস্টে ক্লিক করতে চান, তাদের জিজ্ঞাসা করুন। আপনার টুইটগুলি লিখুন যাতে তারা একটি কল-টু-অ্যাকশন বা সৃজনশীল শিরোনাম অন্তর্ভুক্ত করে যা কেবল এটি দেখার জন্য যে কেউ এটি দেখার জন্য বাধ্য হয়ে তা আরো ক্লিক করে। 

 ৩. সর্বদা একটি ছবি অন্তর্ভুক্ত করুন। ছবি শুধু পোস্টে নয়, ব্লগ জুড়ে। এটা ভাল সঞ্চালন বা কাজ করে। নিশ্চিত করুন যে আপনার ব্লগ পোস্টটির সাথে অন্তত একটি চিত্র যুক্ত রয়েছে এবং প্রতিবার যখন আপনি এটি টুইট করেন তখন এই ছবিটি অন্তর্ভুক্ত করুন। আপনার টুইটটি লোকেদের টাইমলাইনে বড় এবং আরো আকর্ষণীয় হবে, যা তারা ক্লিক করবে এমন আরো বেশি করে তৈরি করুন।

৪. ট্যাগ প্রভাবশালী (influencers)। আপনার শিল্পের কর্মের ্অনুসারি কিছু নির্দিষ্ট মানুষ বা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান আপনার পোস্টে আগ্রহী হবে বলে মনে করুন।  আপনি এটি ভাগ যখন তাদের ট্যাগ করুন। তারা যদি যা দেখে তা পছন্দ করে, তবে তারা আপনাকে আরো বেশি পোষ্ট বানাতে, এটি পুনরায় টুইট বা ভাগ করে নেবে।  

৬. উপযুক্ত হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন। শুধুমাত্র আপনার অনুসরণকারীর বাইরে আপনার ব্লগ পোস্ট প্রচার করার জন্য শিল্প-সম্পর্কিত হ্যাশট্যাগগুলি ব্যবহার করুন। 



৬. শেয়ার বা প্রচার করার জন্য আপনার সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ দিন। আপনি যদি আপনার টুইটার সম্প্রদায়ের কী সদস্যদের কাছ থেকে প্রচুর শেয়ার এবং ইন্টারঅ্যাকশন পান তবে তাদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না। এটি তাদের শেয়ার করার আরও বেশি সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে এবং তা অব্যাহত রাখা এবং এক্সপোজার বৃদ্ধি করতে পারে।

৭. অতিরিক্ত, আপনি আপনার সেরা সম্পাদক ব্লগ পোস্টগুলির জন্য একটি বিজ্ঞাপন প্রচার চালাতি পারেন। আপনার যদি সোশ্যাল মিডিয়ার বাজেট থাকে তবে আপনি এটির কিছু অংশকে আপনার ব্লগে পোস্ট করার পক্ষে আরও কিছু করতে পারেন যা আপনি সাংগঠনিকভাবে পৌঁছাতে পারেন। 

অপেক্ষাকৃত ছোট খরচের জন্য, আপনি হাজার হাজার নতুন শ্রোতা সদস্যদের সামনে আপনার পোস্ট পৌছে দিতে পারেন। আপনার সামগ্রীর সাফল্যের পরিমাপ, প্রচার একটি দুর্দান্ত  প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তবে প্রকৃত সামগ্রীর পাশাপাশি, ব্লগ পোস্ট তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল আপনি এটি কীভাবে প্রচার করবেন। আপনি কিভাবে সঠিক শ্রোতাদের সামনে এটি উপস্থাপন করবেন। 

সবশেষে, আপনি সারা দিনই বিতর্ক করতে পারেন এনং ঘন্টা বাজাতে থাকতে পারেন, কিন্ত   যদি কেউ কাছাকাছি না থাকে তবে এটি কেবলই  গল্প বা শব্দ তৈরি হবে এবং আপনার অপঠিত ব্লগ পোস্ট অবশ্যই  পাঠকদের মাঝে কোনও ছাপ ফেলতে পারবে না।

Wednesday, August 26, 2015

তাবিজ-কবচ চিকিৎসা-বিজ্ঞান ও ব্যাবসা

পুরান ঢাকায় তাবিজ-কবজের দোকান

ঢাকা শহরের ব্যস্ততম রাস্তার তাবিজ-কবচ

ঢাকা শহরের ব্যস্ততম রাস্তার একটি মিডফোর্ট রোড।  এরচেয়ে বেশি পরিচিতির প্রয়োজন নাই।  অন্য দশটি দোকানের মতো এটিও একটি।  কিন্ত দোকানের পন্যের ধরন দেখে ব্যস্ত সড়কেও ভিন্ন চিন্তার উদ্রেগ হলো।  দোকানের পন্য শুধুই তাবিজ-কবচ।  চিন্তার বিষয় নতুন কিছু না, তাবিজ-কবচ চিকিৎসা-বিজ্ঞান ব্যবসা।  চিন্তার উপাদানেরও একই স্থানে পাশা-পাশি অবস্থান।  প্রাচীন ঢাকার এমনকি সারা দেশের বৃহত্তম ব্যবসা স্থল মিডফোর্ট, বিশেষ করে সারাদেশে আধুনিক চিকিৎসা-বিজ্ঞানের ঔষধাধি যন্ত্রপাতি সরবরাহের কেন্দ্রসস্থল, পাশেই স্থাপিত বৃহত্তম চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি মিডফোর্ট হাসপাতাল আর এরই মাঝে সারাদেশে সরবরাহকারি তাবিজ-কবচের দোকান।

লেখা কোন শিক্ষা, পেশা, ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠনকে ছোট বা হেয় করার জন্য নয়।  পুরোটাই নিজস্ব জ্ঞান পারি-পার্শ্বিকতার তুলনামূলক যুক্তিচিন্তা।  নিজের চিন্তাকে অন্যের চিন্তার সাথে তড়িৎ তুলনা করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে ইন্টারনেট সার্চ করতেই আলোচ্য বিষয়ের সংশ্লিস্ট আরও অনেক বিষয় যুক্তি-তর্ক পেয়েগেলাম।  তম্মধ্যে ধর্মীয় দৃষ্টি, বিশেষ করে ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজ-কবচ ব্যবহারের যৌক্তকতা।

আধুনিক বিজ্ঞান, বিশেষ করে চিকিৎসা-বিজ্ঞান অনেক আগেই  এসব তাবিজ-কবচের যৌক্তিকতাকে বর্জন করেছেন।  ধর্মীয় দৃষ্টিতেও তাবিজ-কবচ ব্যবহার না করার পক্ষের যুক্তিই অধিক জোড়াল, তথ্যনির্ভর যুক্তিসঙ্গত।

আসলে কি থাকে এসব  তাবিজ-কবচে !

অধিকাংশ তাবিজ-কবচের ধারক অংশ বিভিন্ন ধাতব পদার্থ যেমন- তামা, রূপা, সোনা, লোহা, টিন, দস্তা, এ্যলোমিনাম, ইত্যাদির একক বা মিশ্রণে তৈরী করা হয়।  আর ভিতরের মূল উপাদান অধিকাংশ সময়ই গাছ-পালার মূল, শিকড়, লতা, পাতার অংশ বা দো কালামের  অংশ বিশেষের অনুলিপি।  সহযোগি উপাদান সমুহের মধ্যে কখনও কখনও লেখার জন্য জাফরাণ জাতিয় বিশেষ কালি ব্যবহার করা হয়, তাবিজ বা কবচের মুখ আটকানোর জন্য ব্যবহৃত হয় মোম বা পবিত্র স্খনসমুহের মাটি, অধিকাংশ সময় কবচের গায়ে এ্যম্বুশ করা আরবী হরফে আল্লহু লেখা থাকে। 
Sponsored:

বুদ্ধাদের যুক্তি-তর্কে তাবিজ-কবচ

 যেকোন যুক্তি-তর্কের মতো তাবিজ-কবচের ক্ষেত্রেও সব বুদ্ধারা যারযার যুক্তির পক্ষে বিভিন্ন উদাহরণ, তথ্য-উপাত্য উপস্থাপন করে যুক্তি গ্রহণযোগ্য করার প্রায়শ চালান।  যারা তাবিজ-কবচ ব্যবহারের পক্ষে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার চেষ্টা চালান তারা অবশ্য তেমন জোড়ালো কোন যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেন না।  তাদের প্রধানতম যুক্তি এ বিদ্যা আদি কাল থেকে চলে আসছে আর অনেক মানুষ যুগযুগ ধরে ব্যবহার করছে,  তাই এর প্রতি অঘাত বিশ্বাসই তাদের বড় যুক্তি।

ইসলামিক বুদ্ধাদের মধ্যে যারা তাবিজ-কবচ ব্যবহারের পক্ষে, তাদের যুক্তিও এমন যে অনেক আগে থেকে এসব ব্যবহার হয়ে আসছে এবং অনেক ইসলামিক ব্যাক্তিত্বরা এর পক্ষে ছিলেন বলে দাবি করেন।  তাদের যুক্তি আমাদের সমাজে বুজুর্গ আলেম ও পির-মাশায়েখগণ দ্বারা জানা-অজানা নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত লোকজনকে ঝাড়-ফুঁক তাবিজ-কব দেওয়ার প্রচলন রয়েছে, আর তারা থেকে উপকার লাভ করেন যার প্রচলন আবহমান কাল থেকেই চলে আসছে  কিন্ত কুরআন-হাদিসের আলোকে তাবিজ-কবচ ব্যবহারের পক্ষে যেসব ব্যাখ্যা প্রদানের চেষ্টা করেন তা তেমন গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়ন্।  

বরং তাবিজ-কবচ ব্যবহার না করার পক্ষের যুক্তি অনেক যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়, যেমন কুরআন-হাদিসে মধুকে সরাসরি ঔষধি গুণসম্বলিত হিসেবে বলা হয়েছে। তাছাড়া অধিকাংশ রোগ থেকে নিরাপদ থাকার অনেক প্রেষ্কিপশন কুরআন-হাদিসে বলা আছে যা আধুনিক চিকিৎসা-বিজ্ঞান দ্বারা প্রমানিত, যেমন খাবারের অনিয়মজনিত, শারীরিক ও মানষীক গঠনজনিত, সামাজিক ও দৈহিক মেলামেশা সংক্রান্ত ইত্যাদি। ইসলামের প্রথম যুগে এমনও দেখাগেছে কোন এক ডাক্তার শহরে ছয় মাস পর্যন্ত বসে থেকে কোন রুগী পান নাই।  তারমানে এই নয় যে তারা কুরআন-হাদিস তাবিজ-কবচে ভরে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছিলেন বলে কোন রোগ-ব্যাধি হয়নি। ধরুন আপনি কোন রোগের জন্য  ডাক্তারের কাছে গেলেন, ডাক্তার আপনাকে প্রেষ্কিপশন দিলেন।  এখন প্রেষ্কিপশন অনুযায়ি ঔষধ খেতে হবে, না প্রেষ্কিপশনটি গলায় ঝুলিয়ে রাখলেই রোগ সেরে যাবে।

সরল  মানুষ  সহজ  যুক্তি

তাবিজ-কবচে যেসব জিনিস ব্যবহার করা হয় তা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।মানব শরীর মূলত লক্ষ লক্ষ রাসায়নিক ক্রীয়া সংগঠনের কারখানা, যা প্রতিনিয়া ঘটে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধাতব পদার্থ এসব রাসায়নিক ক্রীয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন তেজসক্রীয় পদার্থের মানব শরীরে প্রভাব আমরা কম-বেশি সবাই জানি। তেমনি প্রত্যেক পদার্থ্ই কম-বেশি তার চার পাশের বস্তকে প্রভাবিত করতে পারে বলে আমরা ধরতে পারি। তেমনি তাবিজ-কবচে যেসব ধাতু ব্যবহৃত হয় তার প্রভাব থাকলেও সেটা নির্ধারণ ও প্রয়োগের কোন পদ্ধতি এ ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় না। যেমন- মানব শরীরের জন্য লৌহ একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হলেও আমরা প্রতিদিন এক টুকরা লৌহ খেতে পারি না।

উদ্ভিদ, গাছ-পালা, লতা-পাতার গন্ধ, স্পর্শ ইত্যাদি গুণও অনেক সময় মানব শরীরে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করতে পারে, যেমন পিয়াজ চোখের সামনে ধরলে চোখে পানি আসে বা মরিচ নাকের কাছে আনলে হাছি আসে। কিন্ত তাবিজ-কবচের ক্ষেত্রে এমন কোন পদ্ধতি আবিস্কারের কোন তথ্য প্রমান জানা নাই।

তাবজ-কবচের যেসব দোয়া-কালাম লিখা থাকে তা হয়তো তথ্যবহুল। কিন্ত ডাক্তারের প্রেস্কিপশনের মতো, সে অনুসারে ঔষধ খেতে হবে, গলায় ঝুলিয়ে রেখে রোগ সারার নজির বিরল।

আর মসজিদের মোম বা পবিত্রস্থানের মাটি দিয়ে তাবিজ-কবচের মুখ আটকানো সেটা আত্ববিশ্বাস বাড়ানোর কৌশল মাত্র।

তাই তো সরল মানুষ হিসেবে সহজ যুক্তি দ্বারা বিবেচনা করলে তাবিজ-কবচ ব্যবহারের বৈজ্ঞানিক ও ইসলামিক কোন শক্ত ভিত্তি নাই। শুধুই মাত্র ব্যবসা! আর ব্যবসার পরিধি একটি মাত্র দোকানের তাবিজ-কবচের মওজুদ দেখেই অনুমেয়।

Sponsored:


You may like the following pages