WAZIPOINT Engineering Science & Technology: November 2013

Sunday, November 17, 2013

এই প্রিয় মাতৃভাষা

মায়ের মুখের মধুর ভাষা

বাংলা ভাষার জন্য যারা দিয়ে গেল প্রাণ
শহিদ মিনার

একটা ভিডিও ক্লিপ দেখতেছিলাম; বিষয় বস্তু মূলত একজন টুর অপারেট ম্যানেজার ও জৈনক কাস্টমারের সাথে টুর'ত্তোর ঝগড়ার দৃশ্য। মি. জন গত সপ্তাহে টুরে গিয়েছিল একটা টুর অপারেটর কোম্পানির তত্বাবধানে। যাওয়ার সময় প্লেন মিস না করলেও হোটেল থেকে এয়ারপোর্টে বাস পৌঁছতে দেরি করে প্রায় আধা ঘণ্টা। ফলে সবার মতো মি. জন'কেও মানুষিক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।  তাছাড়াও গন্তব্যে পৌঁছানোর পর থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত সারাক্ষণ মুশলধারে বৃষ্টি থাকায় মি. জনের টুর'টা মোটেও ভাল হয়নি। তাই তো সার্ভিস ভাল না পেয়ে ম্যানেজারের কাছে এসেছেন কম্‌প্লেইন করতে। মি. জন'র দাবি যেহেতু টুর ভাল হয়নি তাই ম্যানেজার যেন মোট খরচের উপর ডিসকাউন্ট দিয়ে কিছু টাকা ব্যাক করেন। কিন্তু ম্যানেজারের লজিক- যেহেতু শেষ পর্যন্ত প্লেন মিস হয়নি ও সাইট-সি ভাল ভাবে না করাতে পারলেও তাকে পুরা হোটেল বিল পরিশোধ করতে হয়েছে, তাই কোন প্রকার ডিসকাউন্ট দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব না বলে ম্যানেজার দুঃখ প্রকাশ করছেন। অপরদিকে মি. জন তর্কে হেরে গিয়েও অন্তত "এক মাগে শীত যায়না" না বলে, শেষ করছেন "থ্যাংকস এনি ওয়ে" বলে।


গল্পটা বলার উদ্দেশ্য ব্যাচারা জন' এর বোকামি দেখে। টাকা ও ঝগড়ায় হেরে গিয়েও যাওয়ার সময় ম্যানেজারকে বলল থ্যাংকস! যার বাংলা মানে অনেক ধন্যবাদ!!


ছোট বেলায় বড়রা উপদেশ দিত ভাষা সুন্দর ও নির্ভুল করতে টিভি ও রেডিও থেকে উচ্চারণ এবং পত্রিকা থেকে সঠিক বানান রীতি শিখতে। কখনও স্বল্প শিক্ষিতদের দ্বারা লিখিত বাসের গায়ের ও বিভিন্ন সাইন বোর্ডের ভুল বানান খুঁজে খুঁজে টিভিতে কোন কোন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে দেখানো হত মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য।

আজ জানার অনেক মাধ্যম হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন রেডিও চ্যানেল শুনলে ও অনলাইন সংবাদ ও এর  পাঠকের মন্তব্য পড়লে মনে হয়- আমাদের এই প্রিয় মাতৃভাষা মা'এর সামনে বলতে পারব?

Wednesday, November 13, 2013

রঙ কথা বলে

রং মানুষের মনের কথা বলে:

Color Chart
Fig: Color Chart

প্রত্যেক রঙেরই নিজস্ব অর্থ ও মনের মধ্যে আবেগ তৈরির এক বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। রঙ মনকে বলে দেয় কখন আনন্দে মেতে উঠতে হবে, আর কখন দুঃখে নীরব থাকতে হবে। তাই তো ফ্যাশনের ক্ষেত্রে রঙের সমন্বয় কিভাবে করতে হবে তা একটি অতি বিবেচ্য বিষয়। রঙ আপনার বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্ফুটিত করতে পারে এবং একই সাথে আমাদের ও আমাদের চারিপাশের লোকজনের আচরণ প্রভাবিত করতে পারে। আপনার যদি জানা থাকে কোন রঙ কোন ধরনের আবেগ তৈরিতে সহায়তা করে তাহলে আপনি সহজেই পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে সমন্বয় করে সঠিক রঙের পোশাক নির্বাচন করে সহজেই অন্যদের প্রভাবিত করতে পারেন।

পুরুষদের জন্য বিজনেস ও অফিসিয়াল ড্রেসে ট্রিমিংস যেমন-টাই, নেকটাই, বেল্ট, সু, মোজা ইত্যাদির রঙ নির্বাচন বিশেষ বিবেচ্য বিষয়। পোশাকের বড় অংশ যেমন-শার্ট ও প্যান্ট সাধারণত প্রচলিত রঙের হবে। সুটের রঙ সধারনত গ্রে, নেভি, জলপাই, চকলেট বা কফি। শার্ট অবশ্য বিভিন্ন রঙেরই হতে পারে, তবে অধিক ব্যাবহৃত হয় , সাদা, ব্লু ও গ্রে, অবশ্য পাশাপাশি ডোরা ও চেকও ব্যবহৃত হয়।

আমরা কিছু রঙের নিজস্ব অর্থ ও বৈশিষ্ট্য জেনে-নিব যা আমাদের পোশাকের সাথে সঠিক রঙের ট্রিমিংস নির্বাচনে সহায়তা করবে।
লাল: কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা, দৃষ্টি আকর্ষণ, সক্ষমতা ও শক্তি। 'রেড নেকটাই ইজ দ্যা আল্টিমেট পাওয়ার টাই', প্রচলিত বিজনেস চয়েসে কিছুটা গাঢ় যেমন- চেরি, মেরুন বা ওয়াইন রেড ব্যবহার করতে পারেন।

পিঙ্ক: পিঙ্ক একটি আনন্দ ও হ্যাঁসুচক, বন্ধু-সুলভ, শান্ত রঙ। শরত ও গ্রীষ্মে পিঙ্ক টাই ও নেকটাই গ্রে, নেভি ও কফি শার্টের সাথে চলতে পারে।

কমলা: কমলাকে প্রায়শই সুখী রঙ বলা হয়। একে অর্জন, সাহসী, প্রস্ফুটন, উদীপ্ত ইত্যাদি অর্থ করা হয়।

বাদামী: এটা একটা স্থায়ী রঙ। এটা নির্ভরযোগ্য, সহজ ও আরামদায়ক। গাঢ় বাদামী শীতে ও হালকা বাদামী শরতে বেশি মানানসই।

হলুদ: হলুদ খুবই প্লেফুল একটি কালার যা প্রায়শই এ এনিক্সিটি, অপটিমিজম ও কনফিডেন্সের সাথে একটা সংযোগ স্থাপন করে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে হলুদ টাই বা নেকটাই অনেকে পছন্দ করেন।

গ্রীন: আভিজাত্য, প্রেস্টিজ, শক্তি ও বিজয়ের রঙ হল গ্রীন। অনেক দেশে এ জন্য ব্যাংক নোটের রঙ সবুজ হয়ে থাকে।

ব্লু: বিশ্বাস ও শান্তি স্থাপনের জন্য চাই ব্লু। অবশ্য ভালবাসা, বিঞ্গতা, সামাজিক মর্জদা, সুস্বাস্থ্য, সুখী ও সম্মানিতের প্রতীক ব্লু। ব্লু রঙের টাই বা নেকটাই অনেক জনপ্রিয় এবং প্রায় সব রঙের সুটের সাথে পড়া যায়। শরত ও গ্রীষ্মের জন্য হালকা ব্লু চমৎকার রঙ।

পার্পল: এটা বেশ স্পিরিটোয়াল ও পাওয়ার-ফুল। ফ্রান্সে কোন স্মরণীয় দিনে এ রঙের পোশাক পড়া হয়। নেভিব্রু বা হালকা গ্রে'র সাথে অনেকে পার্পল টাই বা নেকটাই পড়েন।

ল্যাভেন্ডার: এটা রোমান্টিক ও ইমাজেনেটিভ কালার। শরত ও গ্রীষ্মে বিয়ে উৎসবে এ রঙ বেশি ব্যবহৃত হয়।

সোনালী: প্রেস্টিজ ও আভিজাত্যের রঙ সোনালী। নিজেকে চোখ ধাঁধানো আকর্ষণীয় করে প্রকাশ করার জন্য এ রঙ।
রুপালী: রুপালী রঙও প্রেস্টিজ ও আভিজাত্যে প্রকাশ করে, কিন্তু সোনালীর চেয়ে কিছুটা শান্ত স্বভাবে।

কালো: কাল খুব বেশি এলিগেন্ট। অফিসিয়াল ড্রেস হিসেবে কালো কম ব্যবহৃত হয়। শোক প্রকাশের জন্য এ রঙ ব্যবহার হয়।
সাদা: পবিত্রতা ও সততা প্রকাশের রঙ সাদা। ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে জার্মানিতে বিচারকরা সাদা নেকটাই পড়ে থাকেন।

অতএব আপনিও আপনার পছন্দের রঙ ব্যবহার করে নিজেকে আকর্ষনীয় করে তুলুন সবার সামনে।



Saturday, November 9, 2013

বর্জ্য কফি'র তলানিতে প্রতিশ্রুতিময় বিকল্প জ্বালানি

বর্জ্য কফি'র তলানি থেকে  প্রতিশ্রুতিময় বিকল্প জ্বালানি পাওয়ার উপায় উদ্ভাবন করছেন বিজ্ঞানীরা


বর্জ্য কফির ব্যাবহার
চিত্র: বর্জ কফির বিরাট স্তুপ


ভবিষ্যতের জ্বালানী সংকট নিয়ে কমবেশি সবাই চিন্তিত। আর এসময় আরও একটি আশার বার্তা হল- ফেলে দেওয়া পুরাতন কফি'র তলানি থেকে পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় জ্বালানী। আমেরিকার সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ গবেষক এমন উপায় বের করেছেন যার ফলে পুরাতন কফি'র তলানি থেকে ভবিষ্যতের গাড়ি, ফার্নেস ও অন্যান্য উৎসের জন্য সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী পাওয়া সম্ভব।তারা দেখিয়েছেন যে, বর্জ্য কফির তলানি থেকে বায়োডিজেল ও সক্রিয় কার্বনসহ তিন ধাপে জ্বালানী রূপান্তর সম্ভব:
  •  বর্জ্য থেকে তেল পৃথক করে।
  •  বায়োডিজেল উৎপাদনে ইম্পিউরিটি পৃথকীকরণে তেল অপসারণের পর বর্জ্য কফির তলানি শুকিয়ে।
  •  জৈব-বস্তু বা বায়োমাস ব্যবহারের অনুরূপ বিদ্যুতের জন্য একটা বিকল্প শক্তির উৎস হিসেবে বাকি যা ছিল তা পুড়িয়ে।
গবেষকরা পরীক্ষার জন্য দোকান থেকে পাঁচ গ্যালনের এক বালতি বর্জ্য কফি তলানি সংগ্রহ করেন। সংগ্রহের পর বর্জ্য কফি'র তলানি থেকে তেল  এবং  বায়োডিজেল ও উপজাত  গ্লিসারিনে রূপান্তরিত ট্রাইগ্লিসেরাইড (তেল) বের করে ফেলেন। তারপর বর্জ্য কফি'র তলানি শুকান এবং এই বর্জ্য কফি'র তলানি  থেকে প্রাপ্ত বায়োডিজেল শোধন করেন।

প্রথমিক ফলাফলে দেখা যায় যে, বর্জ্য কফি'র তলানিতে শতকরা ৮.৩৭ থেকে ১৯.৬৩ ভাগ তেল রয়েছে এবং কফি তেল থেকে উৎপাদিত বায়োডিজেল ASTM আন্তর্জাতিক D6751মান পূরণ করে। বাণিজ্যিক ভাবে পরিশোধিত পণ্যের সাথে তুলনা করলে,  অশোধিত বায়োডিজেল যেমন-মিথানল এবং রেসিডোয়াল গ্লিসারিং এর ইম্পিউরিটি শোধনে একটি পরিশোধন উপাদান হিসেবে বর্জ্য কফি'র তলানি ব্যবহারের দক্ষতা অবশ্য সামান্য কম পাওয়া যায়।যাইহোক, পরিশোধন পণ্যের খরচ বিবেচনায় গবেষকদের প্রাপ্ত ফলাফল একটি প্রতিশ্রুতিময় বিকল্প জ্বালানির ইঙ্গিত প্রদর্শন করে। বর্জ্য কফি'র তলানি থেকে সক্রিয় কার্বন আহরণে পরিশোধন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ভবিষ্যতে গবেষণা চলতে থাকবে।  পরিচ্ছন্ন-জ্বালানি বায়োডিজেল কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোকার্বন এবং Particular Matters (PM) নির্গমন হ্রাস করে। 

অনুমান করা হয় যে  বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পানীয়  বানানো থেকে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতি বছর এক মিলিয়ন টনের অধিক বর্জ্য কফি'র তলানি জমা হয় যা মাটি ভরাটের কাজে ব্যবহৃত হয়। ঐতিহ্যবাহী বায়োডিজেল সাধারণত মূল্যবান বুট্টা, পাম ও সয়াবিন থেকে তৈরি হয়। আর প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রয় ১৬ বিলিয়ন পাউন্ড কফি উত্পন্ন হয় এবং  এর বর্জ্য কফি থেকে প্রায় ৩৪০ মিলিয়ন গ্যালন বায়োডিজেল উৎপাদন করা সম্ভব বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। অতএব জ্বালানির বিকল্প উৎস হিসেবে এক্ষাতটি একেবারে ক্ষুদ্র নয়। তাই তো বর্জ্য কফি'র তলানিতে প্রতিশ্রুতিময় বিকল্প জ্বালানি খুঁজতে দোষ নেই।


You may like the following pages